Join our telegram Contact Us Join Now!

'এট টু, ব্রুটে?': মৃত্যুর আগে জুলিয়াস সিজারের বলা শেষ কথা!


 বিশ্ববিদ্যালয় জীবনটা বেশ ভালোই কাটছিল জুহিনের। মোটামুটি আট-দশজনের একটা ফ্রেন্ড সার্কেলেও ঢুকে পড়েছিস সে। ক্যাম্পাসে গিয়ে ক্লাস করুক আর না করুক, এই সার্কেলের সদস্যদের মধ্যে কারও না কারও সাথে চা পান করতে করতে আড্ডা সে দিতই। কত বিচিত্র বিষয় নিয়েই না চায়ের কাপে ঝড় তুলত তারা!


তবে এই সার্কেলের মানুষরা তার সবচেয়ে বেশি কাজে আসতো পরীক্ষার আগের রাতগুলোতে। যেহেতু সে ক্লাস তেমন করেনি বললেই চলে, তাই এই মানুষগুলোই ছিল তার শেষ ভরসা। পরীক্ষার আগের রাতে মেসেঞ্জারে এই সার্কেলের কারও কাছে সে সিলেবাস চাইতো, কারও কাছে আগের বছরের প্রশ্ন, আর কারও কাছে শিট।


প্রথম প্রথম সকলেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিত তার দিকে। কিন্তু এভাবে পর পর কয়েক সেমিস্টার যাওয়ার পর বদলে যেতে লাগল তাদের আচরণ। আগের মতো চাওয়া মাত্রই সাহায্য করে না তারা। নানা কথা বলে এড়িয়ে যায়। কয়েকজন তো মেসেজ সিনই করে না। তারপরও জুহিনের তেমন সমস্যা হতো না। কেননা অন্য কেউ তাকে সাহায্য না করলেও, সাদাত তাকে ঠিকই সাহায্য করত। যা চাইত তা-ই সে পেয়ে যেত সাদাতের কাছ থেকে।

কিন্তু সেই সাদাতও একদিন রং পাল্টালো। সাদাতের কাছে ফোন দিয়ে একটা টপিক বুঝে নিতে চাইলে, সাদাত সরাসরি তাকে বলে দিল, "দেখ জুহিন, এতদিন তোকে অনেক হেল্প করেছি। আর পারছি না। পরীক্ষার আগের রাতে তোকে হেল্প করতে গিয়ে আমার নিজেরই পড়া হয় না কিছু। আর কত এগুলো সহ্য করব, বল তো! তুই বাপু অন্য কারও কাছে হেল্প চা। আমাকে ছেড়ে দে ভাই!"


সাদাতের মুখে এমন নিষ্ঠুর বাক্যগুলো শুনে থ' বনে গেল জুহিন। যে সাদাতকে এত বিশ্বাস করেছিল সে, সেই সাদাতই কি না এভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করলো তার সাথে! যাকে বন্ধু কম, ভাই ভাবত বেশি, সে-ই কি না আজ পরীক্ষার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে তাকে বলছে অন্য রাস্তা দেখতে! নিজের অজান্তেই জুহিনের মুখ থেকে উচ্চারিত হলো তিনটি শব্দ, "এট টু, ব্রুটে?"


জন্মবৃত্তান্ত

উপরের উদ্দীপকের কাহিনীটি হয়তো কাল্পনিক। তবে শিক্ষিত সমাজে হরহামেশাই ব্যবহৃত হয় শব্দ তিনটি। যখনই কোনো ব্যক্তি খুব কাছের মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার শিকার হয়, চিরকালের বিশ্বাসভাজন মানুষটি এমন একটা কিছু করে বসে যা ছিল একেবারেই কল্পনাতীত, তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ঠোঁটের গোড়ায় চলে আসে শব্দ তিনটি- এট টু, ব্রুটে?


কখনও কি ভেবে দেখেছেন, কোথা থেকে উৎপত্তি এই শব্দ তিনটির? অনেকেই জেনে অবাক হবেন, এই এট টু, ব্রুটে?'কেই মনে করা হয় সাহিত্য ইতিহাসের জনপ্রিয়তম শব্দত্রয়ী হিসেবে। এবং এদের জনপ্রিয়তার সূচনা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের হাত ধরে।


১৫৯৯ সালে শেক্সপিয়ার রচিত 'জুলিয়াস সিজার' নাটকের তৃতীয় অংকের প্রথম দৃশ্যে এই সংলাপের দেখা পাই আমরা। একের পর এক ছুরিকাঘাতের মাধ্যমে খুন করা হচ্ছিল রোমের স্বৈরশাসক জুলিয়াস সিজারকে। একপর্যায়ে তার নিম্নাঙ্গে ছুরি ঢুকিয়ে দেয় তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও শিষ্য মার্কাস জুনিয়াস ব্রুটাস। ব্রুটাসকেও তার হত্যা ষড়যন্ত্রের অংশীদার হিসেবে দেখতে পেয়ে অবাক হয়ে এই শব্দ তিনটি আউড়ান সিজার।

জুলিয়াস সিজার' নাটকেই যে প্রথম এই সংলাপটি ব্যবহৃত হয়েছে, তা কিন্তু নয়। এর আগেও অন্তত দুটি এলিজাবেথিয়ান নাটকে ব্যবহৃত হয়েছিল সংলাপটি। শেক্সপিয়ারেরই 'ষষ্ঠ হেনরি, তৃতীয় পর্ব' (১৫৯৫), এবং তারও আগে রিচার্ড ঈডস রচিত 'সিজার ইন্টারফেকটাস' (১৫৮২?) নাটকে। তবে এ কথা মানতেই হবে যে 'জুলিয়াস সিজার' নাটকে ব্যবহৃত হওয়ার মাধ্যমেই সংলাপটি চিরঞ্জীব হয়ে উঠেছে।

https://assets.roar.media/assets/EuKTsyyJmUVJKGNK_et-tu-brute.jpg
'জুলিয়াস সিজার' নাটকের দৃশ্য; Image Source: Washington Post 

প্রেক্ষাপট

খ্রিস্টপূর্ব ৪৪ অব্দ। সেনাপতি জুলিয়াস সিজার কেবলই পম্পির পুত্রদের পরাজিত করে বীরের বেশে রোমে প্রত্যাবর্তন করেছেন। আর এর ফলে সিজারের জনপ্রিয়তা তখন তুঙ্গে, যা সিনেটের অনেকের মনেই হিংসা ও ক্রোধের আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তারা ভয় পেতে থাকে যে, সিজার বুঝি তাদের সবাইকে হটিয়ে দিয়ে রোমের একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে উঠবেন, পরিণত হবেন রোমের স্বৈরাচারী সম্রাটে

সিজারকে তারা সম্রাট হিসেবে চায়নি, তারা চেয়েছিল রোম হবে প্রজাতন্ত্র। আর তাদের কান ভাঙাতে শুরু করে ক্যাসিয়াস, যে কি না হাত মিলিয়েছিল সিজারের শত্রু পম্পির সাথে। ক্যাসিয়াস ষড়যন্ত্র করে সিজারকে হত্যা করার, এবং ভুল বুঝিয়ে সে দলে টানে সিজারের ঘনিষ্ট বন্ধু ব্রুটাসকে।

ব্রুটাস কিন্তু চায়নি সিজারকে হত্যা করতে, কিন্তু তাকে বোঝানো হয়েছিল সিজার সম্রাট হয়ে রোমের প্রজাতন্ত্রকে চিরতরে ধ্বংস করে দেবেন। আর তাই নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে একপর্যায়ে ব্রুটাসও শামিল হয় ক্যাসিয়াসের ষড়যন্ত্রে।

এক গণৎকার সিজারকে সাবধান করে দিয়েছিলেন ইডস অফ মার্চের (রোমান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী মার্চ মাসের ১৫ তারিখ, যে দিনটি ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালিত হতো, এবং পুরনো দেনাপাওনা চুকানোর দিন হিসেবে পরিচিত ছিল) দিনটা সাবধানে থাকতে। এমনকি তার নিজের স্ত্রী কালপুর্নিয়াও তাকে বাধা দিয়েছিল। কিন্তু সবার নিষেধ অগ্রাহ্য করে তিনি ইডস অফ মার্চে সিনেটে হাজির হন, এবং সেখানে তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়।

ষড়যন্ত্রকারীরা সকলে মিলে মোট ২৩ বার সিজারকে আঘাত করে। এর মধ্যে সর্বশেষ আঘাতকারী ছিল ব্রুটাস। ব্রুটাস আক্রমণের আগপর্যন্ত সিজার পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করলেও, ব্রুটাসকেও তার হত্যাকারীদের শিবিরে দেখে তিনি হার মেনে নেন, এবং সেই বিখ্যাত কথাটি বলেন, "Et tu, Brute?" এবং শেষ করেন, "Then fall, Caesar!" বলে।

কী আভিধানিক অর্থ এর?

লাতিন ভাষা অনুযায়ী এই শব্দত্রয়ীর বিভিন্ন অর্থ হতে পারে, যেমন: "And you, Brutus?", "You as well, Brutus?" অথবা "Even you, Brutus?" যার সহজ বাংলা দাঁড়ায়, "তুমিও, ব্রুটাস?" তবে শেক্সপিয়ার কিন্তু শব্দত্রয়ী গ্রহণ করেছেন গ্রিক ভাষা থেকে, যেখানে এর মূল সংস্করণ হলো "καὶ σὺ, τέκνον" (কাই সু, টেকনন)। এখানে টেকনন অর্থ হলো পুত্র। সেক্ষেত্রে বাংলা হয়, "তুমিও, পুত্র?"

আসলেই কি সিজার এমন কিছু বলেছিলেন?

জানিয়ে রাখা প্রয়োজন, শেক্সপিয়ার 'জুলিয়াস সিজার' নাটকের অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন প্রাচীন রোমের ইতিহাসবিদ প্লুটার্কের লেখা 'লাইভস' বইটি থেকে। এই বইয়ে উল্লিখিত সিজার, ব্রুটাস ও মার্ক অ্যান্টনির চরিত্রের উপর ভিত্তি করে তিনি নাটকটির প্লট সাজিয়েছিলেন। বলাই বাহুল্য, নিজের অন্যান্য নাটকের মতো এই নাটকেও শেক্সপিয়ার প্রকৃত ঘটনাকে নাটকীয় করে তোলার লক্ষ্যে অনেক কল্পনার আশ্রয় নিয়েছেন, যে কারণে নাটকের সব ঘটনাকে বাস্তব ইতিহাস হিসেবে ধরে নিলে চলবে না।

বাস্তবিকই সিজার এমন কিছু বলেছিলেন, তার কোনো নিশ্চিত প্রমাণ আজ অবধি পাওয়া যায়নি। রোমান ইতিহাসবিদ সুয়েটোনিয়াস এই ঘটনার দেড় শতক পর দাবি করেছিলেন, মৃত্যুর সময় সিজার কিছুই বলেননি। তবে অন্য অনেকেই দাবি করে সিজার আসলেই মৃত্যুর সময় গ্রিক ভাষায় "καὶ σὺ, τέκνον" বলেছিলেন। আর যে প্লুটার্কের লেখা থেকে শেক্সপিয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন, তিনি বলেছিলেন একদমই ভিন্ন কথা। তার মতে, সিজার কিছু বলেনওনি, আবার প্রতিক্রিয়াহীনও ছিলেন না। বরং হত্যাকারীদের দলে ব্রুটাসকে দেখতে পেয়ে তিনি তার পরনের আলখিল্লা দিয়ে মাথা ঢেকে ফেলেছিলেন।

https://assets.roar.media/assets/EuKTsyyJmUVJKGNK_et-tu-brute.jpg
La Mort de César (ca. 1859–1867) by Jean-Léon Gérôme; Image Source: The Telegraph

সিজারের এমন বক্তব্যের তাৎপর্য কী?

যদি আমরা ধরেই নিই যে মৃত্যুর আগে সিজার কিছুই বলেননি, তাহলে কিন্তু সব ল্যাটাই চুকে যায়। কিন্তু অনেক ইতিহাসবিদই যেহেতু ভিন্নমত পোষণ করেছেন, এবং শেক্সপিয়ারের নাটকের মাধ্যমে আলোচ্য শব্দত্রয়ী প্রবাদপ্রতিম হয়ে উঠেছে, তাই আমরা এত সহজেই বিষয়টিকে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারি না। এমনও তো হতে পারে যে সিজার আসলেই এমন কিছু বলেছিলেন। আর যদি সত্যিই তিনি বলে থাকেন, তবে তার গূঢ়ার্থ কী হতে পারে? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে যুগে যুগে অনেক তত্ত্বই উঠে এসেছে। সেগুলোর কোনোটিকেই ধ্রুব সত্য বলে মানার উপায় নেই বটে, কিন্তু তাই বলে সম্পূর্ণ অস্বীকার করাও যায় না। চলুন জেনে নেয়া যাক এমন কিছু সম্ভাবনার বিষয়ে।

বিশ্বাস করতে পারছিলেন না সিজার

সবচেয়ে জনপ্রিয় মতবাদ এটিই যে, সিজার ব্রুটাসকে এতটাই বিশ্বাস করতেন যে, শেষপর্যন্ত ব্রুটাসও তার সাথে এমন করবে সেটি বিশ্বাস করতে পারেননি সিজার। কারণ আর কারও বিশ্বাসঘাতকতায় কিন্তু বিস্ময় প্রকাশ করেননি তিনি। বিশেষ করে ক্যাসিয়াস তাকে আঘাত করার পরও।

নাটকের প্রথম দৃশ্যেই আমরা সিজারের মুখে ক্যাসিয়াসের 'নিষ্ফলা' ও 'ক্ষুধার্ত' দৃষ্টির ব্যাপারে বলতে শুনি, যা থেকে আন্দাজ করে নেয়া যায়, সিজার তখন থেকেই ক্যাসিয়াসকে সন্দেহ করতে শুরু করেছেন। এছাড়া মেটেলাস কিম্বারের মতো অন্যান্য ষড়যন্ত্রকারীরাও যে মনে মনে তার প্রতি ঘৃণা পুষে রেখেছিল, সেটিও সিজারের অজানা ছিল না। কিন্তু ব্রুটাসের ব্যাপারে তিনি একদমই নিঃসন্দেহ ছিলেন। ব্রুটাস নিজেই কেবল একজন সম্মানিত সিনেটর ছিল না, পাশাপাশি তার পরিবারেরও রাজনীতির সাথে লম্বা সংশ্লিষ্টতা ছিল। এ কারণে সিজার ব্রুটাসকে যথেষ্ট সম্মানের চোখে দেখতেন, এবং বয়সে ছোট হওয়া সত্ত্বেও তাকে বন্ধু বলে মনে করতেন। কিন্তু সেই বন্ধুই যখন তার মৃত্যুর অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াবে, সেটি হজম করা সিজারের পক্ষে সত্যিই বড় কঠিন ছিল।

https://assets.roar.media/assets/EuKTsyyJmUVJKGNK_et-tu-brute.jpg
জুলিয়াস সিজার; Image Source: Alamy

ব্রুটাস ছিল সিজারের অবৈধ সন্তান

অনেক ইতিহাসবিদেরই ধারণা, ব্রুটাসের মায়ের সাথে সম্পর্ক ছিল সিজারের। স্বভাবতই, মায়ের সাথে কোনো পরপুরুষের সম্পর্কের গুজব বাজারে রটে থাকলে, সেই পুরুষকে কোনো পুত্রের পক্ষেই সহজভাবে মেনে নেয়া সম্ভব নয়। তাই অনেকেরই বিশ্বাস, সিজারের প্রতি পূর্বের রাগ মেটাতেই হয়ত তাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে যোগ দিয়েছিল ব্রুটাস। এবং এই মতবাদের সূত্র ধরেই আসে পরের মতবাদটিও। কিছু কিছু ইতিহাসবিদ এমনকি এ কথাও মনে করেন, ব্রুটাসের জন্ম হয়তো সিজারের সাথে তার মায়ের অবৈধ সম্পর্কের ফলেই। এবং সিজার তার শেষ সংলাপে ব্রুটাসকে 'পুত্র' বলে অভিহিত করে সে ইঙ্গিতই দিয়ে যান।

এদিকে ব্যক্তিগত প্রতিশোধই যদি ব্রুটাসের মূল লক্ষ্য হয়ে থাকে, এর স্বপক্ষেও আরেকটি জোরালো যুক্তি রয়েছে। কথিত আছে, সিজার নাকি ব্রুটাসকে এতটাই পছন্দ করতেন যে, নিজের মেয়ে জুলিয়ার বিয়েও তিনি ঠিক করেছিলেন ব্রুটাসের সাথে। কিন্তু পরে তিনি নিজের রাজনৈতিক অবস্থান জোরালো করতে জুলিয়ার বিয়ে দেন পম্পির সাথে। ব্রুটাস জুলিয়াকে ভালোবাসতো, তাই তাকে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিল সে, এবং মনের জ্বালা মেটাতে সিজারকে হত্যায় সম্মত হয়। তবে নাটকের কাহিনীর সাথে এ মতবাদ একেবারেই সাংঘর্ষিক। কারণ নাটকে আমরা দেখেছি শুরুতে সিজারকে মারার ব্যাপারে তার অসম্মতি ও পুরো নাটকজুড়ে চলা তার মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব।

ব্রুটাসের প্রতি সিজারের অভিশাপ কিংবা সাবধানবাণী

কিছু কিছু ইতিহাসবিদ আবার এমনটিও মনে করেন, শেষোক্ত তিনটি শব্দ ছিল আসলে ব্রুটাসের প্রতি সিজারের অভিশাপ বা সাবধানবাণী। কীভাবে? তাদের মতে, পুরো বাক্যটি শেষ করে যেতে পারেননি সিজার। তিনি মূলত বলতে চেয়েছিলেন, "You too, my son, will have a taste of power." (তোমাকেও, আমার পুত্র, একদিন ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ করতে হবে) এখানে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ বলতে সিজার বোঝাতে চেয়েছিলেন, ব্রুটাসও একদিন ক্ষমতা লাভ করবে, কিন্তু তারপর তাকেও এভাবেই নৃশংসভাবে মৃত্যুবরণ করতে হবে।

https://assets.roar.media/assets/EuKTsyyJmUVJKGNK_et-tu-brute.jpg
১৯৫৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জুলিয়াস সিজার ছবির একটি দৃশ্য; Image Source: IMDb

শেষ কথা

সিজার আসলেই শব্দ তিনটি উচ্চারণ করেছিলেন কি না, এবং করলেও তিনি ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছিলেন, সে প্রসঙ্গে বিতর্ক চলতে থাকবে অনন্তকাল ধরে। তবে একটি বিষয় কিন্তু নিঃসকোচে বলে দেয়া যায় যে বর্তমান সময়ে শব্দত্রয়ী পরিণত হয়েছে বিশ্বাসঘাতকের প্রতি ছুঁড়ে দেয়া অন্যতম অনুমেয় উক্তিতে। নিত্যদিনের ওঠাবসায়, কিংবা বিভিন্ন গল্প-উপন্যাস, নাটক-সিনেমায় রেফারেন্স আকারে নানাভাবে আসে এই শব্দত্রয়ী। প্রিয়জন বা বিশ্বাসভাজন কারও দ্বারা ক্ষতির শিকার হওয়ার পর আমাদের মাথায় প্রথম এই শব্দগুলোই আসে। এবং একই সমান্তরালে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে আমরা মীর জাফরের মতো ব্রুটাসকেও কল্পনা করে নিই।

কিন্তু আসলেই কি ব্রুটাস আর মীর জাফরকে এক পাল্লায় মাপা উচিত? নাকি ব্রুটাস ছিল প্রকৃতপক্ষেই একজন 'সম্মানিত ব্যক্তি'? যারা 'জুলিয়াস সিজার' নাটকটি দেখেছেন বা পড়েছেন, তারা তো এর উত্তর জানেনই। আর যারা দেখেননি, তারা আর দেরি না করে দেখে বা পড়ে ফেলতে পারেন শত শত বছর ধরে সাহিত্যাকাশে ধ্রুবতারার মতো জ্বলজ্বল করতে থাকা এই নাটকটি। পাশাপাশি আগ্রহী দর্শকরা দেখতে পারেন এই নাটকের কাহিনীর উপর ভিত্তি করে নির্মিত বিভিন্ন মুভি এডাপ্টেশানও।


Thanks for reading: 'এট টু, ব্রুটে?': মৃত্যুর আগে জুলিয়াস সিজারের বলা শেষ কথা!, Sorry, my English is bad:)

Getting Info...

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.